গতকাল বুধবার ১৩ সেপ্টেম্বর ঢাকাই চলচ্চিত্রের খ্যাতিমান নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন অভিনয়শিল্পী, পরিচালক-প্রযোজকসহ সংশ্লিষ্টরা। নির্মাতার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন এক সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শাবনূরও। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে নিয়ে একটি পোস্টও দিয়েছেন এই নায়িকা।
গতকাল বুধবার ১৩ সেপ্টেম্বর নিজের ফেসবুকে সোহানুর রহমানের সঙ্গে নিজের একটি ছবি শেয়ার করে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন শাবনূর। শোক প্রকাশের পাশাপাশি তিনি জানান, মৃত্যুর আগে তাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গেলেন সোহানুর রহমান। পাঠকদের সুবিধার জন্য পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
''আহা জীবন! অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলতে হচ্ছে যে, বরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান আর আমাদের মাঝে নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বলা দরকার, গতকাল সোহানুর রহমান সোহানের স্ত্রীও স্ট্রোক করে মারা গেছেন। সোহান আঙ্কেল যাবার আগে আমার বিরুদ্ধে মিডিয়াতে কিছু উল্টা-পাল্টা ও মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গেলেন। আমাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন ও আমার সম্মানহানি করে গেলেন।
অনেকেই তার কটু কথার বিরুদ্ধে পাল্টা জবাব দিতে বলেছিলেন। আমি চাইলেই মিডিয়াতে তার এই মিথ্যা অপবাদের প্রতিবাদ করতে পারতাম। এর আগেও উনি কোনো এক ইন্টারভিউতে আমার বিরুদ্ধে এ রকম বাজে মন্তব্য করেছিলেন। তখনও আমি তার অপবাদের বিরুদ্ধে কোনো পাল্টা জবাব দেইনি। সোহান আঙ্কেল অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ, আমার পিতৃতুল্য। আমি কোনো অন্যায় করলে উনি আমাকে শাসন করতে পারতেন।
এইতো, কিছুদিন আগেও তার সঙ্গে আমার ফোনে আলাপ হয়েছিল। তখন তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আঙ্কেল আপনি কি কোনো কারণে আমার ওপর রাগ করে আছেন? আপনি যে আমার বিরুদ্ধে মিডিয়াতে উল্টা-পাল্টা কথা বলতেছেন। তিনি তখন বললেন, তুই আমাদের ইন্ডাস্ট্রির মেয়ে, আমার মেয়ের মতো, তোর ওপর কেন রাগ করতে যাব। আর আমিতো তোর বিরুদ্ধে কোনো বাজে কথা বলিনি। এরপরে আমার বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে তিনি আবারও মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গেলেন।
কিন্তু আমার একটাই দুঃখ, আমি জানতে পারলাম না উনি কেন বা কার চক্রান্তে প্রভাবিত হয়ে আমার পেছনে উঠে-পড়ে লেগেছিলেন। যাইহোক, আমি সবার উদ্দেশে একটা কথা বলতে চাই, ভাই জীবনটা খুবই ছোট্ট। এতো দাঙ্গা-ফ্যাসাদ করে কী লাভ? একে অন্যের বিরুদ্ধে না লেগে আসুন আমরা সবাই মিলে মিশে থাকি। গন্তব্যতো একটাই, সবাইকে এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে হবে। সবশেষ শাবনূর লেখেন, যেহেতু ক্ষমা একটি মহৎ গুণ, তাই উনাকে মাফ করে দিলাম আমি। আমি আঙ্কেল ও তার স্ত্রীর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।''